তেলের দাম বৃদ্ধির উচিলায় মাত্র তিন দিনে বাজারে সবজির দাম আকাশ ছোঁয়া হয়ে গেছে। বাজারের কোন সবজিই এখন ৮০ টাকার নিচে নেই। ট্রাক বন্ধ বলে ভাড়া বেশি বলে রাতের অন্ধকারে সব চালু রেখে এমন মূল্যবৃদ্ধি প্রতারণার শামিল। সাধারণ মানুষের ভোগান্তির বিষয় কেউ ভাবছে কিনা সেটিই এখন অনেকের প্রশ্ন।
গত কয়েকদিনে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাস ভাড়া বাড়লো, এরপর বাড়লো লঞ্চ ভাড়া। আর এই বাড়ার কার্যক্রম চলা অবস্থায় নাগালের বাইরে চলে গেছে সবজি বাজার।
অর্থনীতি বিষয়ক একটি প্রতিষ্ঠান বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল রাজধানীর মধ্যে ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। হঠাৎ করেই কারণে-অকারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি হওয়া যেন একটি অতিপরিচিত রূপ। করোনা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পরে পুরো বিশ্বেই অর্থনৈতিক মন্দা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তার বিশাল প্রভাব পড়েছে রাজধানী ঢাকার ওপর। রাজধানীর বাজারে চাল থেকে শুরু করে অতিপ্রয়োজনীয় সব দ্রব্যাদির দাম আকাশছোঁয়া। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মতে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এক মাসে প্রায় ১৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়েছে।
চাল-ডালের পাশাপাশি আটা, চিনি, তরকারি, মাছ, মাংসের দাম দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, ক্ষেত্রবিশেষে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিম্ন স্তরের দিকে চলে যাচ্ছে। বর্তমানে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা এতই খারাপের দিকে যাচ্ছে যে, শুধু দরিদ্র না, মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চ-মধ্যবিত্ত মানুষের প্রতিদিনকার জীবনযাত্রা অনেক কঠিন হয়ে গিয়েছে।
সরকার এবং ব্যবসায়ী শ্রেণির মধ্যে সামঞ্জস্য তৈরি করতে হবে। সরকারের কঠোরতা এবং ব্যবসায়ী শ্রেণির পুঁজিবাদী মনোভাব ত্যাগ করা এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। সরকার ইতোমধ্যে টিসিবির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে। সরকারকে টিসিবির পণ্য যেন সঠিকভাবে সঠিক সময়ে বণ্টন হয় এবং যথেষ্ট পণ্য যেন সাধারণ মানুষ কিনতে পারে সেদিকে কঠোর নজরদারি করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য যদি সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে তাহলে জীবনের দুর্ভোগ অনেকাংশে লাঘব হবে।